সংবাদচর্চা রিপোর্ট :
দেশ ছেড়েছেন শামীম ওসমান, দেশ ছাড়েননি এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে রয়েছে ব্যাপক তর্ক। তবে, তিনি যদি দেশ ছেড়ে না গিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন এবং তাকেসহ তার দোসরদের আইনের আওতায় আনার দাবি তুলেছেন নগরবাসী।
এদিকে শামীম ওসমানকে ঘিরে এত তর্কবিতর্কের মধ্যে বিভিন্ন সূত্র বলছে ভিন্ন কথা। সূত্রটি বলছে, এখনও দেশ ত্যাগ করতে পারেননি দেশজুড়ে গডফাদারখ্যাত শামীম ওসমান। তিনি কয়েকবার বর্ডার ক্রস করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। তবে দেশত্যাগ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা তদবির চালাচ্ছেন তিনি।
এদিকে অসমর্থিত একটি সূত্র বলছে, এতদিন শামীম ওসমানের যেসমস্ত নেটওয়ার্ক ছিল। এতদিন তাকে যারা নানাভাবে সহযোগিতা করেছিলেন। তারা কেউই এখন তাকে দেশত্যাগে সাহায্য করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। তাই বলে যে তিনি দেশেই থাকবেন তা-ও নয়। কেননা, বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি দেশ ছাড়তে না পারলে বেশ কয়েকটি হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হবেন এই জাদরেল আওয়ামী লীগ নেতা।
এদিকে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর পিতা এক বক্তব্যে বলেছেন, বিভিন্ন সূত্র থেকে তিনি জানতে পেরেছেন শামীম ওসমান দেশ ছাড়তে পারেননি। তিনি দেশেই আছেন বলে তিনি তার ওই বক্তব্যে বলেন। তার ভাষ্য, শামীম ওসমান যদি দেশত্যাগ করতে না পারেন তাহলে সরকার যেন তাকে কোনোভাবেই পালাতে না দেয়। তাকে যেন গ্রেপ্তার করেÑ এমন দাবিই তুলেছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি।এদিকে আরেকটি অসমর্থিক সূত্র থেকে জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার গুলশান থেকে ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করে বিপুলসংখ্যক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন এবং ছেলেসহ তিনি এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করেন। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জে আসলে তিনিও আসেন। এরপর ৩০ জুলাইও তিনি নারায়ণগঞ্জে এসেছিলেন। পরে এদিকে তাকে আর দেখা যায়নি।
সূত্র মতে, হামলার আশঙ্কা থেকে ওইদিনই তিনি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে গুলশানের বাসা ছেড়ে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে উঠেন, পরিবার নিয়ে। সেখান থেকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ কছিলেন। তবে ৩ জুলাই হঠাৎ করেই গুঞ্জন উঠে শামীম ওসমান দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ড পাড়ি জমিয়েছেন। এমন গুজবের পরপরই তার ছেলে কিশোর গ্যাংয়ের শেল্টারদাতা অয়ন ওসমান একটি বহুতল ভবন থেকে একটি ভিডিও বার্তা দেন। সেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, এটি যদি ঢাকা না হয়, তাহলে ঢাকা কোনটি? ওই ভিডিওতে বাইরের যে চিত্র দেখা গিয়েছিল তা দেখে অনেকের ধারণা ছিল এটি হোটেল সোনারগাঁও। এই হোটেলের পিছনের দিক থেকে হাতিরঝিল অংশের ভিডিও তিনি করেছিলেন।
অন্যদিকে এদিন বিকেলে শামীম ওসমানকে শেখ হাসিনার দলীয় কার্যালয়ে একটি সভায় উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। সেদিন তিনিও জানিয়েছিলেন ‘আমি দেশ ছাড়িনি। দেশেই আছি।’ যদিও এরপর তাকে আর কোথাও দেখা যায়নি। এমনকি সেদিন ও পরদিন তথা চার আগস্টও তিনি দেশ ছাড়তে পারেননি। পরদিন ৫ আগস্ট মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির দিন দুপুরেই পুরো দেশের পরিস্থিতি পাল্টে যায়। স্থবির হয়ে যায় সব। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। ফলে এদিনও তিনি পরিবার নিয়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেও সাহস করতে পারেননি। ফলে ধারণা করা হচ্ছে শামীম ওসমান পরিবার পরিজন নিয়ে পাঁচ তারকা হোটেলেই অবস্থান করে থাকতে পারেন।
তবে তিনি যে পাঁচ তারকা হোটেলে এখনও অবস্থান করছেন বিষিয়টি সত্য মিথ্যা যাহোক। বেশির ভাগ মানুষের ধারণা শামীম ওসমান দেশেই আছেন। এখানেই তিনি লুকিয়ে রয়েছেন। সময় সুযোগ মিললে দেশ ছেড়ে প্রথমে ভারতে পাড়ি জমাবেন। পরে সেখান থেকে অন্য ব্যবস্থা নিবেন। তবে, তিনি যদি দেশ ছাড়তে না-ই পারেন তাহলে তিনি যেন দেশ আর ছাড়তে না পারেন সে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সমাজের বিশিষ্টজন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষেরা।